আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
আনারস খাওয়ার আগে আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নিন। যেহেতু আনারস আমাদের কাছে একটি পরিচিত ফল তাই আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানা এরপরে খাওয়া জরুরী। আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলে আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
সূচিপত্রঃ আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- আনারস খাওয়ার অপকারিতা
- আনারস সংরক্ষণ করার নিয়ম
- আনারস খাওয়ার নিয়ম
- আমাদের শেষ কথা
আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
আমরা কম বেশি সকলেই আনারসের উপকারিতা সম্পর্কে জানি। কারণ আমরা যখন কোন রোগে আক্রান্ত হয় বিশেষ করে জ্বর সর্দি কাশি তখন আনারস খেয়ে থাকি। তবে যারা আনারসের উপকারিতা না জেনে এটি খায় তাদের জন্য আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। আপনাদের জানার সুবিধার্থে আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা আলোচনা করা হবে।
আরো পড়ুনঃ পেয়ারা পাতার ২৫ টি উপকারিতা ও অপকারিতা
আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতাঃ
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে
- হাঁপানি রোগ প্রতিরোধে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
- দাঁতের যত্নে আনারস
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে
- হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে
- হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে
- ত্বকের যত্নে
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে - আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। যে উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন এবং আমাদের বিভিন্ন অসুখ থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে সেই উপাদানগুলো আনারসের মধ্যে রয়েছে। আনারস যদি নিয়মিত খাওয়া যায় তাহলে এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে - আমাদের মধ্যে কম বেশি সকলের রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ অথবা নিম্ন রক্তচাপ থাকে তাহলে আনারস খেতে পারেন। কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে উচ্চ পটাশিয়াম। এটি পটাশিয়ামের পরিমাণ বৃদ্ধি করে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
হাঁপানি রোগ প্রতিরোধে - অনেক সময় আমাদের হাঁপানি মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাই হাঁপানি রোগ দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই এর চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। হাঁপানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে বিটা ক্যারোটিন। আনারসের মধ্যেই রয়েছে এই উপাদান। হাঁপানি প্রতিরোধে আপনি আনারস খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে - বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস হল মারাত্মক একটি রোগ। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আনারস কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়া আগে থেকে যদি আপনি আনারস খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে এটি ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি অনেকটা কমিয়ে দেয়।
দাঁতের যত্নে আনারস - দাঁত কে ভালো রাখার জন্য দাঁতের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দাঁতের যত্ন নিয়ে থাকে ক্যালসিয়াম। সেজন্য আমাদেরকে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ ফল খেতে হবে। আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা দাঁতের যত্ন নিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে - ক্যান্সার হল একটি মরণব্যাধি রোগ। আপনি যদি ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আনারস খেতে পারেন। এছাড়া আগে থেকে আনারস খেলে এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন শক্তি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে - আনারসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং পানি যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই আপনি যদি হজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত আনারস খাওয়া শুরু করুন।
হার্টের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে - আমাদের হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে হবে নিজেকে সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকার জন্য। কারণ আমাদের দেহের মধ্যে হৃদপিণ্ড হলো সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে আনারস কারণ এর মধ্যে রয়েছে ফাইবার পটাশিয়াম সহ ভিটামিন আরো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।
ত্বকের যত্নে - বিশেষ করে মেয়েদের বলছি আপনার যদি ত্বকের যত্ন নিতে চান সঠিকভাবে তাহলে আনারস খেতে পারেন। কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি সহ আরো বেশ কিছু উপাদান যেগুলো তৈলাক্ত ত্বক দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া আমাদের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে - স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আপনি যদি স্মৃতি শক্তি ধরে রাখতে চান অথবা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে নিয়মিত আনারস খাওয়া শুরু করুন। কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপাদানসমূহ যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আনারস খাওয়ার অপকারিতা
যে জিনিসের উপকারিতা রয়েছে তার কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। আমরা যেহেতু ইতিমধ্যেই আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জেনে। সেহেতু অবশ্যই আমাদেরকে আনারস খাওয়ার অপকারিতা গুলো জেনে নিতে হবে। আনারস খাওয়ার আগে এর অপকারিতা গুলো জেনে নিন।
আরো পড়ুনঃ কমলা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা ও অপকারিতা
১। অতিরিক্ত আনারস খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কারণ কেউ যদি খুব বেশি আনারস খেয়ে থাকে তাহলে এটি আমাদের মুখের স্বাদ নষ্ট করে দিতে পারে।
২। এছাড়া অতিরিক্ত আনারস খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব, বমি হওয়া এমনকি ডায়রিয়া সহ পেট ব্যথা এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত আনারস খাওয়া উচিত নয়।
৩। কেউ যদি পরিমাপের চাইতে বেশি আনারস খেয়ে নেয় তাহলে তার ইউরিনে এসিড বেড়ে যেতে পারে কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে এক প্রকার এসিড। তাই আমাদেরকে বেশি আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪। ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কেউ যখন অতিরিক্ত আনারস খেয়ে নেয় তখন তার রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে যার ফলে এটি আমাদের ডায়াবেটিস বৃদ্ধি করে ফেলে।
৫। অধিক পরিমাণে আনারস খেলে এটি আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে দেয়। কারণ এক কাপ মিষ্টি আনারসের মধ্যে প্রায় ৮৪ ক্যালোরি থাকে। যা ওজন কমানোর চাইতে আরো বেশি বৃদ্ধি করে ফেলে।
আনারস সংরক্ষণ করার নিয়ম
আমাদের মধ্যে অনেকেই আনারস সংরক্ষণ করে থাকে। তবে কিভাবে আনারস সংরক্ষণ করবেন এই বিষয়টি জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই আনারস সংরক্ষণ করতে পারবেন দীর্ঘদিন। আমরা ইতিমধ্যেই আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি যেগুলো জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আনারস সংরক্ষণ করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
আপনি যখন আনারস কিনবেন তখন আনারসের বাইরের অংশ যখন কমলা কালার থাকবে তখন কিনবেন। কারণ সবুজ কালার থাকলে আনারস কাঁচা অবস্থায় থাকে। আপনি চাইলে আনারস ঘরের তাপমাত্র রাই সংরক্ষণ করতে পারবেন। তবে আপনার বাসায় যদি ফ্রিজ থাকে তাহলে ফ্রিজে রেখে আনারস খুব সহজে সংরক্ষণ করা যায়।
আনারস খাওয়ার নিয়ম
প্রতিটি উপকারী ফলের খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। আমরা যদি এর উপকারিতা গুলো পেতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। ঠিক তেমন আনারস খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। যেহেতু আজকের এই আর্টিকেলটি আনারস নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে তাই এখন আমরা আনারস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেব।
১। আনারসের সঙ্গে আপনি আপনার পছন্দ ফলগুলো মিশিয়ে তারপরে একসাথে সকল ফল মাখিয়ে খেতে পারেন। যার ফলে সকল ফলের উপকারিতা গুলো একসাথেই পাওয়া যায়।
২। অনেকেই আনারস মাখা খেতে পছন্দ করেন। কাসুন্দি দিয়ে যদি আনারস মাখা যায় তাহলে এর স্বাদ আরো বেশি বৃদ্ধি পায়।
৩। অনেকেই আছে আনারসের জুস খেতে পছন্দ করে। কেউ যদি খালি পেটে আনারসের জুস খায় তাহলে এটি অনেক উপকারী। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে।
আমাদের শেষ কথাঃ আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
প্রিয় পাঠক গণ আজকের এই আর্টিকেলে আনারসের ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা, আনারস খাওয়ার অপকারিতা, আনারস সংরক্ষণ করার নিয়ম, আনারস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু আনারস খুবই উপকারী একটি ফলসহ তো অবশ্যই আমাদেরকে আনারস খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী আনারস খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ লেবু খাওয়ার ৩০ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যমূলক আর্টিকেল আরো জানতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। আমরা এই ধরনের স্বাস্থ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করি। ২০৭৯১
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url