ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াবে যেসব খাবার ও খাবার খাওয়ার নিয়ম

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডে প্রাকৃতিক তেল আছে, যা ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। নিয়মিত নাশপাতি, বাদাম ও মটরশুঁটি খেলে আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই উজ্জ্বল হয়ে উঠবে অনেকখানি। সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বক ভালো রাখতে প্রচুর পরিমাণে সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন। রান্না করা সবজির পাশাপাশি সালাদ হিসেবে কাঁচা সবজিও ত্বকের জন্য উপকারী।


কি কি খাবার খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে?


অনেকেই মসৃণ উজ্জ্বল ত্বক চায়। কিন্তু অনেক সময় নিয়মিত যত্ন আর নামি-দামি কসমেটিকস ব্যবহারের পরও ত্বকের সৌন্দর্য ঠিক থাকে না। ত্বকের চকচকে ভাব ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এই ১৩ টি খাবার ডায়েটে রাখুন।


১. টমেটোঃ

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে:

টমেটোতে আছে ভিটামিন সি, ই এবং বিটা ক্যারোটিন যা ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করে ও ত্বক সুন্দর রাখে।

বয়সের ছাপ কমায়ঃ

ত্বক ভালো রাখার উপাদান ভিটামিন বি যেমন- বি ওয়ান,বি থ্রি, বি পাইভ, বি সিক্স এবং বি নাইন ইত্যাদি টমেটোতে পাওয়া যায়। এই ভিটামিনগুলো ত্বকের বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও বলিরেখা, ভাঁজ, বয়সের দাগ, চোখের চারপাশের দাগ, পিগমেন্টেইশন ইত্যাদি থেকে টমেটো ব্যবহারের মাধ্যমে রক্ষা পাওয়া যায়।

২. পানিঃ

ত্বক ভালো রাখতে বেশি করে পানি পান করার বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত ২-২.৫/৩ লিটার পানি পান করতে হবে। ত্বকের ভাঁজ দূর করার পাশাপাশি শরীরে চিনি জমতে দেয় না। শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান ঘামের মাধ্যমে বের করে দেয় পানি। পর্যাপ্ত পানি পেলে ত্বকের কোষে পানি পৌঁছায় এবং ত্বক সজীব দেখায়। পরিমিত পানি খেলে ব্রণের উপদ্রবও কমে।

 ৩. লেবু জাতীয় ফলঃ

লেবু, কমলা, মোসাম্বি, জাম্বুরা, মাল্টা এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে দারুন কার্যকরী। কারণ এতে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিনস, যা স্কিনকে হাইড্রেটেট রাখে আর ন্যাচারালি স্কিনটোন ব্রাইট করতে হেল্প করে। মেলানিন কমিয়ে স্কিনকে উজ্জ্বল করে তুলতে লেবু জাতীয় ফল বেশ ভালো কাজ করে।

৪. শসা

ত্বকের যত্নে শসার কথা কল্পনা করলেই চোখে ভাসে   শসার স্লাইস আর মুখে ফেইসপ্যাক তাই না? ফেইসপ্যাকে শসা ব্যবহার করা হয় কেননা এতে আছে কুলিং ইফেক্ট, যা ত্বকে এনে দেয় প্রশান্তি। শুধুমাত্র ফেইসপ্যাকে নয়, রেগুলার শসা খেলে আপনি অনেক উপকার পাবেন। শসাতে আছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি আর ভিটামিন কে। আর এই উপাদানগুলো আপনার স্কিনকে রাখে হেলদি্ আর গ্লোয়িং। আরও উপকারিতা আছে, বয়সের ছাপ বা বলিরেখা কমাতে ও স্কিনকে হাইড্রেটেড রাখতে দারুন কার্যকরী এই উপাদানটি।

 ৫. মাছ:

ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা চাইলে প্রতিদিনের খাবারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ রাখা ভালো। এই অ্যাসিড চেহারায় বয়সের গতি ধীর করে এবং প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখে। ওমেগা থ্রি শক্তিশালী প্রদাহরোধী উপাদান সমৃদ্ধ যা ব্রণ দূর করে। তাই ত্বক সুন্দর রাখতে ওমাগা থ্রি সমৃদ্ধ মাছ খাওয়া উপকারী।

৬. ফলঃকলা

কলা ত্বক ভাল রাখার জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-এ, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। পাশাপাশি এটি ত্বকের মলিনভাব দূর করতেও সাহায্য করে।

আপেল

আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, এ, সি আর অন্যান্য দরকারি নিউট্রিয়েন্ট। আনইভেন স্কিনটোন রিপেয়ারে, হেলদি গ্লো ধরে রাখতে এবং ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত দেখাতে এই ফলটি দারুন কাজ করে।

৭. ইয়োগার্ট / টকদই

ত্বকের বিভিন্ন ছোটখাটো সমস্যার সাথে অন্ত্রের বা Gut এর একটি সম্পর্ক আছে! টকদইয়ে আছে বিভিন্ন ধরণের প্রোবায়োটিকস, যেটা হজমে সাহায্য করে। স্কিনের অনেক ধরনের সমস্যার সল্যুশন দেয় এটা। ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়, ব্রেকআউটের সমস্যা কমিয়ে স্কিনকে করে উজ্জ্বল ও লাবন্যময়।

৮. মশলাঃ দারচিনি:

ত্বকের জন্য খুব উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান। এছাড়া রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে  সহায়তা করে এই মসলা। ব্রণ-ফুসকুড়ি রোধেও দারুচিনি দারুণ কার্যকর।

জিরাঃ

জিরায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে জমে থাকা দূষিত উপাদান দূর করতে সাহায্য করে। শরীরে দুষিত পদার্থের পরিমাণ বেড়ে গেলে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়। ব্রণ ত্বকের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় জিরা রাখা উচিত।

৯. গ্রীন টিঃ

শরীরকে ডিটক্স করার জন্য গ্রীন টি নিঃসন্দেহে একটি দারুন উপাদান। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ ন্যাচারাল অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এতে আছে Phytonutrient যেটাকে বলে Epigallocatechin Gallate (EGCG), স্কিনকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সুরক্ষা দেয়। এছাড়া ডার্ক স্পট কমাতে এবং অকালবার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে এই উপাদানটি। এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বককে হেলদি রাখতে ও স্কিনটোন ব্রাইট করতে দারুন কার্যকরী।

 ১০. গাজরঃ

গাজরে আছে বিটা ক্যারোটিন। স্কিনের আউটার লেয়ারে কোষের বৃদ্ধি করে, হেলদি স্কিন সেলসকে প্রোমোট করে ত্বককে স্মুথ রাখে। গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যেটা ড্যামেজড কোলাজেন রিস্টোর করে। সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এটি সহজলভ্য এবং সহজেই ডায়েটে অ্যাড করা যায়।

১১. বাদামঃ (চিনাবাদাম/ আমন্ড/আখরোট)

স্কিনের জন্যও দারুন উপকারি! বাদাম ভিটামিন ই এর সবচেয়ে ভালো উৎস। এটি ড্যামেজড স্কিন সেলসকে রিপেয়ার করে এবং ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করে। স্নেহজাতীয় খাবার ত্বককে সুস্থ্য ও সুন্দর রাখে। এতে থাকা Linoleic acid বা প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কভাব কমিয়ে ফেলে।

১২. পালং শাকঃ

এমন একটি সবুজ সবজি এটি, যার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। এতে আছে lutein এবং zeaxanthin, এগুলো স্কিনের জন্য খুবই বেনিফিসিয়াল। পালং শাকে আরো আছে ভিটামিন এ, ই, কে- যা স্কিনকে স্বাস্থ্যজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো স্কিনের তারুণ্যও বজায় রাখে, সেই সাথে বার্ধক্যের ছাপ পরার প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করে।

১৩. ডার্ক চকলেটঃ

ডার্ক চকলেটে flavanol নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে, যেটা স্কিনকে মসৃণ ও সুন্দর রাখতে দারুন ইফেক্টিভ। কোকোয়া বিন স্কিনকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে সুরক্ষা দেয়। এটি অকালবার্ধক্য রোধ করে। পরিমিত পরিমাণে ডার্ক চকলেট খেলে ত্বক সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি হার্টও ভালো থাকে


ত্বক উজ্জ্বল করার সবজি?


পালং শাক, ব্রোকলি, পেঁয়াজ কলি, সেলারি এবং শসা ত্বকে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। এ ধরনের শাক-সবজি প্রতিদিন খাবারের তালিকায় রাখলে ত্বকের লাবণ্য বৃদ্ধি পাবে। ড্রাই ফ্রুটস যেমন বাদাম, কিশমিশ, খেজুর, আখরোট ও কাজু স্বাস্থ্য এবং ত্বকের জন্য উপকারী। কারণ এগুলোতে থাকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল।


বিটরুট: অ্যান্থোসায়ানিন্স সমৃদ্ধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিটরুটে পাওয়া যায় যা বলিরেখার বিরুদ্ধে কাজ করে। চাইলে বিটরুট সিদ্ধ করে তাতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। নিয়মিত পানে গালের দুপাশে উজ্জ্বলতা ফুটে উঠবে।

গাজর: গাজরে আছে বেটা ক্যারোটিন যা শরীরে ভিটামিন এ হিসেবে রূপান্তরিত হয়। এটা ত্বকে বয়সের ছাপ দূর করতে সহায়তা করে।

লেবু: ব্রণ, দাগ ও ব্ল্যাকহেডস প্রতিরোধে কাজ করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন। 

মিষ্টি কুমড়ার বীজ: মিষ্টি কুমড়ার বীজে আছে জিঙ্ক, এটা নতুন কোষ গঠনে সাহায্য করে। এই বীজ ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়। ভালো ফলাফলের জন্য মুঠোভরে মিষ্টি কুমড়ার বীজ খান। 

পালংশাক: পালংশাক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, এটা ত্বকের কোষকে দৃঢ় করে এবং বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়। ফলে ত্বক পরিষ্কার দেখায়।

স্ট্রবেরি: স্ট্রবেরিতে আছে ত্বকের রং হালকা করার ক্ষমতা। এটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মালিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা ত্বকে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ভাব আনে। স্ট্রবেরির স্মুদি অথবা পেস্ট তৈরি করে দই ও মধু মিলিয়ে মুখের ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

মিষ্টি আলু: অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি উপাদান সমৃদ্ধ। আরও আছে ভিটামিন এ এবং সি। এক চিমটি লবণ দিয়ে মিষ্টি আলু সিদ্ধ করে নিন। এরপর এতে গোলমরিচ, লেবুর রস মিশে খান। এটা একটা আদর্শ বিকালের নাস্তা হতে পারে।

টমেটো:

রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যাসিডিক উপাদান। এটা ত্বকের লোমকূপ টান টান করতে এবং ব্রণ ও অন্যান্য ক্ষতি দূর করতে সাহায্য করে। এর লাইকোপেইন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বার্ধক্য প্রতিরোধে কাজ করে। তাছাড়া রোদপোড়া-ভাব কমায় এবং ত্বক ঝুলে পড়া প্রতিরোধ করে।


ত্বক উজ্জ্বল করার উপায় কি?


যদিও ফর্সা মানেই সুন্দর তা নয় তবুও আমরা চাই ত্বকটা একটু ফর্সা আর উজ্জ্বল হোক। মনে মনে সবারই এই ইচ্ছাটা থাকে। তাই সবাই অনেক প্যাক-ক্রিম ট্রাই করি ত্বক ফর্সা আর উজ্জ্বল করার জন্য। তবে যুগ যুগ ধরে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক উজ্জ্বল করার এই প্রচেষ্টা অনেক বেশি কার্যকর হয়েছে। আজ তেমনি কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপায় নিয়ে লিখব। বিস্তারিত  নিচে দেওয়া হল >


(১) গুঁড়া দুধ ও লেবুর রসের হোয়াইটেনিং ফেইস প্যাক

একটি পাত্রে ১ চা চামচ গুঁড়া দুধ, ২ চা চামচ লেবুর রস আর ১/২ চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার পুরো মুখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক পরিষ্কার হওয়ার সাথে সাথে আগের তুলনায় অনেকটা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। সব ধরনের ত্বকেই এই প্যাক ব্যবহার করা যাবে। লেবুতে থাকা প্রাকৃতিক  ব্লিচিং উপাদান মধু আর দুধের সাথে মিশে ত্বক ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। প্যাকটি তৈরি করে তেমন কোন বাড়তি ঝামেলাও নেই আর উপাদানগুলো প্রত্যেকের রান্নাঘরেই কমবেশি থাকে। আরেকটি কথা,  নিয়মিত এই প্যাক লাগালে ত্বকে ব্রণের সমস্যাও দূর হবে।

 (২) টক দই আর ওট মিলের স্কিন হোয়াইটেনিং মাস্ক

সারারাত ১ টেবিল চামচ ওট মিল ভিজিয়ে রেখে সকালে এটি পেস্ট করে এর সাথে ১ টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন। এটি নিশ্চিতভাবে ত্বক ফর্সা করে। নিয়মিত ব্যবহারে অবশ্যই ভাল ফল পাবেন। ড্রাই টু নরমাল ত্বকের জন্য এই প্যাক বেশ উপকারী।

(৩) আলুর খোসার স্কিন হোয়াইটেনিং ফেইস প্যাক

লেবুর রসের মত আলুর খোসায় ব্লিচিং উপাদান আছে । আলু খোসার পেস্ট নিয়মিত ত্বকে লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল আর ফ্রেশ হবে। সব ধরনের ত্বকেই এই প্যাক ব্যবহার করা যাবে।

(৪) হলুদ আর টমেটোর ফেইস প্যাক

উজ্জ্বল ত্বক পেতে এক চিমটি হলুদ, ১ চা চামচ টমেটো বা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে মুখের ত্বকে লাগান নিয়মিত। অবশ্যই ত্বক ফর্সা হবে। আমরা কমবেশি সবাই জানি টমেটো ত্বকের কাল দাগ দূর করতে কতোটা কার্যকরী। টমেটোর ব্লিচিং উপাদান আর হলুদের ভেষজ উপাদান ত্বক ফর্সা করতে একসাথে কাজ করে। স্বাভাবিক থেকে তৈলাক্ত এবং শুষ্ক ত্বকে এই ফেইস প্যাকটি ব্যবহার করা যাবে।

(৫) আমন্ড ফেইস প্যাক

আপনি ৪-৫ টি আমন্ড সারারাত ভিজিয়ে রেখে এটি গুঁড়া করে পেস্ট তৈরি করে এর সাথে বাটার মিল্ক বা মালাই মিশিয়ে এই প্যাক ত্বকে লাগান। ১০-১২ মিনিট এই প্যাক ত্বকে রাখুন। এরপর কিছুক্ষণ স্ক্রাব করে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন প্যাকটি ত্বকে উজ্জ্বলতা এনে দিতে দারুণভাবে কাজ করেছে। এই প্যাক আপনার ত্বক নরম করবে, ত্বকের মৃত কোষ দূর করবে আর ত্বক হবে উজ্জ্বল। তবে আপনি যদি মালাই ব্যবহার করতে না চান তাহলে মধু বা টক দইও ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশ উপকারী এটি।

 (৬) বেসনের ফেইস প্যাক

বেসন সব সময় আমাদের ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করে ত্বককে তরুণ রাখতে সাহায্য করে। বেসনের সাথে বাটার মিল্ক মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগান আর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকে এই ফেইস প্যাক ব্যবহার করা যাবে না।

 (৭) পুদিনা পাতার ফেইস প্যাক

পুদিনা পাতায় বিদ্যমান অ্যাসট্রিজেন্ট ত্বকে পুষ্টি যোগানোর সাথে সাথে ত্বকে উজ্জ্বল করে তুলে। ১৫ থেকে ২০টি পুদিনা পাতা পেস্ট করে এটি মুখে লাগান এবং পুরো মুখে পেস্টটি লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে টান টান করবে আর ত্বকের ছোট ছোট পোর ঢেকে দেবে।পুদিনা পাতায় অ্যালার্জি থেকে থাকলে এই প্যাকটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। 

 (৮) কলার ফেইস প্যাক

একটি পাত্রে পরিমান মতো কলা, ১ চা চামচ মধু আর ১ টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকে লাগান। এই প্যাকটি সান ট্যান দূর করে ত্বক ফর্সা করে তুলবে। সব ধরনের ত্বকের সাথে মানানসই এই ফেইস প্যাক।

 (৯) চন্দনের ফেইস প্যাক

আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তবে চন্দনের গুড়ার সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। আপনার ত্বকে যতটুকু পরিমানে লাগে ততটুকু নিবেন। আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই ফর্সা হবে এতে। এই প্যাক আপনার ত্বক শুধু উজ্জ্বলই করবে না আপনাকে দেখতেও অনেক ফ্রেশ লাগবে।

এই তো জেনে ফেললেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার ৯টি উপায়। এখন উপরে দেওয়া প্যাকগুলো থেকে যেটি আপনার ত্বকের জন্য উপকারী সেই প্যাকটি ব্যবহার করুন;


গাজর খেলে কি ত্বক উজ্জ্বল হয়?


নিয়মিত গাজর খেলে ত্বক হবে সজীব ও উজ্জ্বল। গাজর ত্বকের টিস্যু মেরামত করে এবং ক্ষতিকর সূর্য রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সহায়তা করে। তাছাড়া গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন। যা শরীরে গিয়ে ভিটামিন-এ তে পরিণত হয়।


“আর গাজর সঠিকভাবে ত্বকে ব্যবহার করতে পারলে বহুগুণে উপকার পাওয়া যায় এই উপাদানের কারণে,” বলেন এই ত্বক বিশেষজ্ঞ।

যুক্তরাষ্ট্রের বোর্ড নিবন্ধিত ত্বক বিশেষজ্ঞ এবং ‘স্কিন ওয়েলনেস ডার্মাটোলজি’র প্রতিষ্ঠাতা ডা. কোরে এল. হার্টম্যান বলেন, “গাজর সমৃদ্ধ ত্বকের প্রসাধনীতে গাজরের নির্যাস অথবা এর বীজের তেল ব্যবহার করা হয়। এগুলো উচ্চ বেটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ।”

ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং দুষণের কারণে হওয়া ত্বকের ক্ষতি রোধ করে। বেটা ক্যারোটিন রূপান্তরিত হয় ভিটামিন এ হিসেবে, যা বয়সের ছাপ কমায়, কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায়। ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে।” 

রেটিনলও উচ্চ ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। এই দুই উপকরণই ত্বকে একই ধরনের কাজ করে। কোষের পুনরুৎপাদন এবং কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে।


ডা. মিকাইলভ সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “এই একই ফলাফল গাজরের উপাদান সমৃদ্ধ প্রসাধনী থেকে আশা করা ঠিক নয়। কারণ গাজর এই উপাদানগুলোর মতো খুব দ্রুত কাজ করতে পারে না।”

ডা. হার্টম্যানও এই বিষয়ে সমর্থন করে বলেন, “গাজর সমৃদ্ধ প্রসাধনী ভিটামিন এ’য়ের মতো দ্রুত কাজ করে না। তাই ত্বক এক্সফলিয়েট করতে চাইলে বা ব্রণ কমাতে চাইলে গাজর বাদ দিয়ে রেটিনল ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে।”


“আর যদি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান তাহলে গজর সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার করা যেতে পারেন।”

গাজর খাওয়ার নির্দিষ্ট কিছু উপকারিতা রয়েছে যেমন- আঁশ বৃদ্ধি এবং চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা। তবে প্রসাধনী হিসেবে এটা ব্যবহার করা ত্বকে ভিন্ন কিছু পরিবর্তন আনতে পারে।

ডা. মিকাইলভের মতে, “খাবার ও প্রসাধনী হিসেবে একই পণ্য ব্যবহার দেহে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করতে পারে। তবে ত্বক ভালো রাখতে বেটা ক্যারোটিনের ব্যবহার সবচেয়ে নিরাপদ।”

“ত্বকে গাজরের নির্যাস সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে লক্ষ করা উচিত, এর সঙ্গে আর্দ্রতা রক্ষাকারী উপাদান যেমন- সেরামাইড, হায়ালুরনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন ইত্যাদি আছে কিনা”, বলেন ডা. হার্টম্যান।

গাজর অন্যান্য ভিটামিন এ সমৃদ্ধ পণ্যের মতো কাজ করে। তিনি রেটিনয়েড সমৃদ্ধ পণ্যের সঙ্গে এটা ব্যবহারে নিষেধ করেন। কেননা তা ত্বকে জ্বলুনির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার উপায়


ত্বককে স্বাস্থ্যবান ও উজ্জ্বল করতে গ্রিন টি দারুণ কাজ করে। শরীরে জমে থাকা টক্সিন বের করে ত্বক ভেতর থেকে করে উজ্জ্বল। এ ছাড়া ত্বকের দাগ–ছোপ, কাটা দাগ, লালচে ভাব কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে দুটি গ্রিন টি ব্যাগ কেটে তার সঙ্গে দুই চামচ মধু ও সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে লাগিয়ে রাখুন।


 শেষ কথা


আশা করি এই পোস্টটি আপনাদের উপকারে আসবে। স্কিন ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায় এই তথ্যটি আপনার অন্যান্য বন্ধুদের জানাতে চাইলে এখনই পোস্টটি তাদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং নিত্য-নতুন পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url