TIK TOK থেকে কিভাবে আয় করা যায়?

TikTok একটি টিপিং বৈশিষ্ট্য চালু করেছে যা নির্বাচিত নির্মাতাদের টিপস এবং অনুদান থেকে অর্থ উপার্জন করতে দেয়। ভক্তরা এই বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহার করতে পারেন তাদের পছন্দের নির্মাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে। ভিডিও উপহার দর্শকদের নির্মাতাদের ভার্চুয়াল উপহার এবং কয়েন পাঠাতে দেয়। কিছু নির্মাতা লাইভ স্ট্রিম চলাকালীন উপহার সংগ্রহ করতে পারেন।

শুনে খুশি হবেন যে টিকটক থেকে সত্যিই টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো শুধু যে মনিটাইজেশন অন করে  টিকটকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন তা কিন্তু না। টিকটক থেকে আয় করার আরও অভিনব কৌশল রয়েছে। একটি মাত্র প্লাটফর্ম থেকেই আপনি অনেক উপায়ে টাকা আয় করতে পারবেন তা-ও আবার আনলিমিটেড।

ইউটিউবকে বাদ দিলে বলা যায় টিকটক বর্তমানে সবথেকে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সোস্যাল মিডিয়া সাইট। দিনদিন এই সাইটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কেননা টিকটক এর মেইন ফিচার হলো শর্ট ভিডিও। আর শর্ট ভিডিও দর্শকের কাছে এতো বেশি গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে যে খুব কম সময়েই যে কেউ এই প্লাটফর্মে ভাইরাল হতে পারছে। তাই এই প্লাটফর্ম থেকে খুব সহজেই দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে।

টিকটক নগদীকরণের প্রয়োজনীয়তা

প্রথম প্রয়োজনীয়তা যা আপনাকে পূরণ করতে হবে তা হল কিছু নির্দিষ্ট দেশে থাকা। ক্রিয়েটর ফান্ডে TikTok-এ নগদীকরণের জন্য যোগ্য হওয়ার জন্য, আপনাকে নিম্নলিখিত দেশগুলির মধ্যে একটিতে থাকতে হবে: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন বা ইতালি 2023 সালের মার্চ পর্যন্ত।

টিকটকে কি টাকা আয় করা যায়?


আপনি কি জানেন যে আপনি আপনার লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে TikTok-এ অর্থ উপার্জন করতে পারেন? TikTok-এ 1,000-এর বেশি ফলোয়ার সহ অ্যাকাউন্টগুলি তাদের ভিডিওগুলি লাইভ স্ট্রিমিং এবং নগদীকরণ শুরু করতে পারে ৷ ব্যবহারকারীরা কয়েন কিনতে পারে যা তারা পরবর্তীতে লাইভ ভিডিও তৈরি করা ব্যবহারকারীদের দিয়ে দেয়।

মনিটাইজেশন অন করে

ইউটিউব বা ফেসবুকে মনিটাইজেশন অন করে আয় করার কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি। কিন্তু ইউটিউব বা ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া খুব একটা সহজ না বললেই চলে। অন্যদিকে টিকটক থেকে খুব সহজেই আপনি ভাইরাল হতে পারবেন এবং মনিটাইজেশন অন করে আয় করতে পারবেন। কেননা টিকটকে শর্ট ভিডিও ফিচার থাকায় এখানে দর্শক সংখ্যা অনেক বেশি।


এখন কথা হলো আপনি কীভাবে টিকটকে মনিটাইজেশন অন করবেন? মনিটাইজেশন অন করার প্রথম শর্ত হলো আপনার টিকটক প্রোফাইলে দেয়া জন্ম সাল অনুযায়ী আপনার বয়স ১৮ বছর হতে হবে। আপনার কমপক্ষে ১০ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে। এবং সবথেকে চ্যালেঞ্জিং শর্ত হলো মনিটাইজেশন আবেদন করার আগে লাস্ট ৩০ দিনে আপনার 100K Views থাকতে হবে। এই সকল শর্ত পূরণ হলে আপনাকে টিকটক থেকে মনিটাইজেশন দেয়া হবে।


তবে ইউটিউব বা ফেসবুকে মনিটাইজেশন অন করার পরে যেমন আয় হয় টিকটকে তার থেকে তুলনামূলক কম আয় হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশের কনটেন্ট ক্রিয়েটর দের খুবই সামান্য একটা এমাউন্ট প্রদান করা হয়। তাই মনিটাইজেশন অন করে আয় করার বিষয়ে খুব কম কনটেন্ট ক্রিয়েটর গুরুত্ব দিয়ে থাকে। মনিটাইজেশন না করেও আপনি টিকিট থেকে বিভিন্ন উপায়ে আয় করতে পারবেন যা ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করা হবে।

টিকটকে ভাইরাল ভিডিও কিভাবে হয়?

একটি ভাইরাল TikTok ভিডিও তৈরি করার জন্য প্রবণতা বোঝা, ধারাবাহিক পোস্ট করা, অনুসরণকারীদের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করা, সংক্ষিপ্ত এবং আকর্ষক বিষয়বস্তু তৈরি করা এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে ক্রস-প্রমোটিং প্রয়োজন। এখন, এই কৌশলগুলি বাস্তবায়ন করার এবং আপনার সামগ্রীকে TikTok-এ ভাইরাল করার পালা

অনলাইন বিজনেস করে

সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম হলো টিকটক। আপনি চাইলে টিকটক এর মাধ্যমে অনলাইনে বিজনেস করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে টিকটক হবে আপনার ব্যবসার মার্কেটিং এর একটি শক্তিশালী মাধ্যম। কেননা নিয়মিত টিকটকে আকর্ষণীয় ও ট্রেন্ডি ভিডিও আপলোড করতে থাকলে খুব সহজেই দর্শক এনগেজড রাখতে পারবেন। ফলে অল্প সময়ে অধিক দর্শকের কাছে আপনার ব্যবসায়িক কার্যকলাপ তুলে ধরতে পারবেন।

তবে প্রথম কাজ হবে টিকটকে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিয়মিত কনটেন্ট আপলোড করা। কেননা আপনি তো চাইলেই ওভার নাইট ভাইরাল হয়ে যাবেন না। এজন্য আপনাকে এই প্লাটফর্মে সময় দিতে হবে। যখন দেখবেন আপনি মোটামুটিভাবে একটি স্ট্রং কমিউনিটি তৈরি করতে পেরেছেন ঠিক তখন আপনি আপনার ব্যবসায়ের প্রফেশনাল ভিডিও তৈরি করতে শুরু করবেন।

তাহলে বুঝতেই পারছেন টিকটক এর মাধ্যমে কতোটা সহজ ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যাবে। তাই এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে অনলাইন বিজনেস এর একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে পারবেন। এভাবে  টিকটক থেকে আনলিমিটেড আয় করতে পারবেন।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে

ধরে নিলাম টিকটকে আপনি এখন মোটামুটি ভাইরাল। অর্থাৎ আপনার একটি শক্তিশালী দর্শক রয়েছে। এখন আপনি চাইলেই যে কোনো প্রোডাক্ট এর প্রোমোশনাল ভিডিও তৈরি করলে তা দর্শকদের আকৃষ্ট করবে। কিন্তু আপনার নিজের কোনো বিজনেস বা প্রোডাক্ট নেই। এই অবস্থায় আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে বেশ ভালো একটা এমাউন্ট আয় করতে পারবেন।


এফিলিয়েট মার্কেটিং মানে হলো অন্য কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট এর প্রমোশন করে তাদের বিক্রয় বৃদ্ধি করা এবং বিক্রয়ের ওপরে একটি কমিশন আদায় করা। যেহেতু আপনি চাইলেই এখন যে কোনো প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করতে পারবেন তাই আপনি এই মার্কেটিং করেই আয় করুন। কোনো ওয়েবসাইট বা শপের লিংক আপনার টিকটক  ভিডিওতে এডজাস্ট করে দিন। অথবা সরাসরি বিজ্ঞাপণের মাধ্যমে প্রোডাক্ট বিক্রি করে দিন। বিক্রির ওপরে একটা নির্দিষ্ট হারে কমিশন ঐ কোম্পানি আপনাকে দিবে।


বর্তমানে অনলাইন প্লাটফর্মে সফলভাবে বিজনেস করে এমন বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধি করছে। তাই এই ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া খুব সহজ। আপনি নিজে থেকে বিভিন্ন ব্রান্ড প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিতে পারেন। অথবা ঐ সকল কোম্পানির ওয়েবসাইটে চোখ রাখতে পারেন যারা মাঝে মাঝে এফিলিয়েট মার্কেটার হায়ার করার জন্য জব টিউন করে। আসল কথা হলো আপনার একটি শক্তিশালী কমিউনিটি থাকলে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ পাওয়াটা কঠিন কিছু না।

ফিলিপাইন টিকটক থেকে কিভাবে আয় করা যায়?

আপনি TikTok ফিলিপাইনে অর্থ উপার্জন করতে পারেন? কিভাবে? হ্যাঁ, আপনার TikTok অ্যাকাউন্ট নগদীকরণ করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, যেমন ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, মার্চেন্ডাইজ সেলস এবং লাইভস্ট্রিমিংয়ের সময় টিপস এবং উপহার সংগ্রহের মাধ্যমে।

2024 সালে কি ফিলিপাইনে টিকটক নির্মাতা তহবিল উপলব্ধ?

TikTok স্রষ্টার তহবিল ভিউ প্রতি অর্থ প্রদান করে। এটি ফিলিপাইনে এখনও বেআইনি নয়। এটি 2024 বা 2025 সালে অবৈধ হয়ে যেতে পারে । যোগ্য হওয়ার জন্য, আপনার অ্যাকাউন্টে দশ হাজার ফলোয়ার এবং এক লক্ষ ভিউ প্রয়োজন।

প্রোডাক্ট রিভিউ করে

আপনি আপনার টিকটক৷ একাউন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্যের রিভিউ করতে পারেন। একটি পণ্য সম্ভাব্য ক্রেতা কেন কিনবে, এই পণ্যের উপযোগিতা কী, এই পণ্যের দাম কেমন, সমস্যা কী কী এই ধরনের তথ্য নিয়ে বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করবেন। তো প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে দর্শক তৈরি করার জন্য ফ্রি রিভিউ ভিডিও তৈরি করতে হবে। কেননা প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার Views কম থাকবে তাই পণ্যের প্রমোশন খুব বেশি হবে না। ধীরে ধীরে আপনার জনপ্রিয়তা বাড়লে তখন পেইড রিভিউ এর দিকে অগ্রসর হবেন।

বিভিন্ন কোম্পানি যখন দেখবে আপনার রিভিউ থেকে সম্ভাব্য ক্রেতার রেসপন্স ভালো আসছে তখন তারা যেচে আপনার কাছে পেইড রিভিউ করাতে আসবে। আর যেহেতু প্রথম থেকেই আপনি রিভিউ ভিডিও করে লোকজনের মনে আস্থা তৈরি করতে পেরেছেন তাই পেইড রিভিউ থেকেও ভালো সাড়া মিলবে। এতে করে ব্যবসায়ী-ও খুশি আর ক্রেতা-ও খুশি। মাঝখান থেকে আপনি পেইড রিভিউ এর বিনিময়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ঐ কোম্পানির কাছ থেকে পাবেন।

আর রিভিউ ভিডিও করার পাশাপাশি ঐ পণ্যটি স্টক করে আপনি নিজেও বিক্রি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ইনকাম তুলনামূলক বেশি হবে।

ডোনেশন এর মাধ্যমে

টিকটক কনটেন্ট ক্রিয়েটর দের ভিডিও ভালো লাগলে অনেকেই টিকটকার দের ডোনেশন দিয়ে থাকে। এটা মূলত প্রতিভার পুরষ্কার হিসেবে কিছু লোকজন সেচ্ছায় ডোনেট করে। বাংলাদেশে এমন ঘটনা খুব কম ঘটে বললেই চলে। কিন্তু বহির্বিশ্বে এমন ডোনার এর সংখ্যা প্রচুর।

তাই আপনার কনটেন্ট গুলো যদি শুধুমাত্র বাংলাদেশ কেন্দ্রীক না হয়ে বরং আন্তর্জাতিক মানের হয় তাহলে ডোনেশন এর মাধ্যমে আয় করার একটি সুযোগ রয়েছে। যারা নতুন টিকটক ভিডিও তৈরির চিন্তা ভাবনা করছেন তাদের আমি আন্তর্জাতিক মানের ভিডিও তৈরি করতে সাজেস্ট করবো। পাশাপাশি কনটেন্ট হতে হবে রুচিসম্মত ও গ্রহনযোগ্য। যদি সত্যিই আপনার কনটেন্ট উল্লেখযোগ্য ভাবে গ্রহনযোগ্যতা পায় তাহলে আপনি একটা ভালো এমাউন্ট ডোনেশন পেতে পারেন।

শেষকথা

আশাকরি টিকটক ভিডিও তৈরি করে আয় করার উপায় গুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। যারা অল্প সময়ে পপুলার হয়ে আয় করতে চান তাদের জন্য এই পদ্ধতিগুলো সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে দেরি না করে আজই একটি  টিকটক একাউন্ট তৈরি করে ফেলুন এবং চমৎকার সব কনটেন্ট তৈরি করে নিজের জনপ্রিয়তা বাড়ান। ধন্যবাদ।

আর আমার  আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমার ওয়েবসাইটটি ফলো করে রাখুন


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url